• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

ছিঃ ছিঃ বলার ভাষাও নেই...

প্রকাশ:  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১১:৪৩ | আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১২:১১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

আইনের এমন একজন লিজেন্ডারি লোকের সাথে এমন আচরণ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। ছিহ!!! ধিক্কার জানাই। ডিপার্টমেন্ট সেরা ছাত্র ছিলেন তিনি। এরপর বিসিএস, বিজেএস দুইটাতেই প্রথম হলেন। সবাই যখন কনফিউজড ছিল যে সে কোনদিকে যাবে, তখন সবাইকে চমকে দিয়ে সে টুপ করে ডিপার্টমেন্টে জয়েন করলো।

পরের বছর যখন সে আবার বিজেএস দিল, সবাই ভাবলো যে হয়তো ছেলে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। এরকম প্রটোকলের জীবন ছেড়ে কেউ শিক্ষকতার মতো পেশায় আসতে চায়? কিন্তু আসল চমক তো তিনি দিলেন যখন সেবারও প্রথম হওয়ার পর বললেন যে, আমি তো শুধু এটা দেখতে পরীক্ষায় বসেছিলাম যে আমার মেধা আগের মতোই আছে কি না।

সম্পর্কিত খবর

    ছাত্র-ছাত্রীরা যখন তাকে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে, "স্যার, আফসোস হয়না যে জাজ না হয়ে শিক্ষক হলেন?" তিনি বলেন, "৫০০টা জাজ নিজের হাতে বানানোর পর আবার কিসের আফসোস ব্যাটা?" কেন তিনি এই গর্বটা করতে পারেন? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের যেকোনো প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে তার নাম বলে দেখুন।

    সবাই শ্রদ্ধায় মাথা নোয়াতে বাধ্য। তিনি যে জীবনমুখী শিক্ষা দিয়েছেন সবাইকে, এটা কেউ কখনই ভুলতে পারবেন না। বদমেজাজী এই শিক্ষকটি যেকোনো ডিপার্টমেন্টেরই শিক্ষার্থীকে ডেকে কখনও ড্রেসআপ নিয়ে ধমকে দেন, চুল কাটতে বলেন, হাঁটাচলা শেখান, কখনও বা অযথাই ক্যারিয়ার নিয়ে জ্ঞান দেন। রবীন্দ্র ভবনে ক্লাস হয়ে এরকম ডিপার্টমেন্টের খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থীই আছে যারা তাঁকে চেনেন না, বা কখনও তাঁর কাছে কোন 'জ্ঞানগর্ভ উপদেশ' পাননি।

    আলাভোলা এই মানুষটা ঢোলা টি-শার্ট বা আয়রন ছাড়া শার্টের নিচে ট্রাউজার আর স্যান্ডেল পরেই ক্লাসে চলে আসেন। সাথে থাকে একটা ইয়াবড় ব্যাগ, যা ভারী ভারী সব আইনের বইয়ে ঠাসা। প্রথম বর্ষে তিনি যখন আমাদের কোর্স টিচার ছিলেন, একটা রেপ কেস পড়াতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের কথা উঠলেই তিনি কোন না কোনভাবে তুলতেন সকল নির্যাতিত মা-বোনের কথা। স্বভাবসূলভভাবেই তখনও তার চোখের কোনা দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তো।

    এই মানুষটাকে গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কিছু 'মেধাবী' ইন্টার্ন চিকিৎসক মেরে আধমরা করে দিয়েছে। কেন জানেন? তিনি নাকি কর্তব্যরত মহিলা ইন্টার্নকে 'ইভটিজিং' করেছেন। খবরটা শোনার সাথে সাথেই তার বর্তমান, সাবেক শিক্ষার্থীসহ যাঁরা তাকে ন্যুনতম চেনেন, সবার একটাই রিঅ্যাকশন- "পাগল নাকি? জহির স্যার করবেন ইভটিজিং?"

    তবে আসুন, প্রকৃত ঘটনা শুনাই। আমার কথাগুলো সত্যি কি না তা যাচাই করে নিবেন প্রথম-আলো, যুগান্তর, সমকালের মতো জাতীয় দৈনিকগুলো থেকে। কোন ব্যাঙের ছাতা-মাতা ফেসবুক পেজের কথা বিশ্বাস করবেন না যারা আইয়ুব বাচ্চু, রুনা লায়লা, খান হেলালদের ২দিন পরপর উপরে পাঠিয়ে দেয়।

    স্যারের মেয়ে পরে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছে। তিনি তার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে রাত সাড়ে ১১টায় রামেকে গিয়েছেন। ওয়ার্ডে দৌড়াদৌড়ির সময় পিংকি নামক এক ইন্টার্ন ডাক্তারের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে তিনি স্যারকে গালিগালাজ করেন এবং তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেন। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে স্যার তাকে ননসেন্স বলে। এরপর তিনি ফোন করে ইন্টার্ন ডাক্তার পরিষদের সভাপতি কামালকে ডাকেন এবং ইন্টার্ন ডাক্তাররা দল বেঁধে এসে স্যারকে মারতে থাকেন।

    এক পর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তব্যরত নার্সরা স্যারকে একটি অফিসরুমে ঢুকিয়ে তালা লাগিয়ে দেন। অতঃপর সোনার ছেলেমেয়েরা তালা ভেঙ্গে স্যারকে পুনরায় মারতে শুরু করে। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। তিনি আহত অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে থাকলেও তাঁকে কোন চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।

    রাতে এই খবর পেয়ে আইন বিভাগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকালে একত্র হয়ে প্রতিবাদসভার আয়োজন করে। এবং রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে দোষীদের বিচার কামনা করে। অন্যদিকে হামলাকারীদের বাঁচাতে তারা তাদের কিছু ফেসবুক পেজ থেকে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন স্যারের নামে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এমতাবস্থায় স্যার ন্যায়বিচার পাক এটা সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর দাবী।

    কারণ সাধারণ জনগণের টাকায় তৈরি হওয়া ডাক্তাররা কেন একজন বাবার বয়সি লোকের গায়ে হাত তুলবেন? তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেটাকে কি জাস্টিফাই করে তারপর আইনগত স্টেপ নিতে পারতেন না? কারণ এখন নারী-নির্যাতনের কেস দেশে সবচেয়ে গুরুত্বসহকারে এবং কমসময়ের মধ্যে বিচার হয়। আর ইন্টার্ন ডাক্তারদের এরকম ক্যাডারসূলভ আচরণ এইই প্রথম না। কয়দিন পরপরই এরকম নেতিবাচক কারণে তাঁরা খবরের শিরোনাম হন। এমনকি মহিলা ইন্টার্নকে 'ম্যাডাম' না ডেকে 'আপা' ডাকায় চিকিৎসা না করেই হসপিটাল থেকে বের করে দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে রোগীর মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটেছে এই রামেকে।

    এতকিছুর পরেও ঐ অসহায় লোকটা মামলা করেননি নিজের মান-সম্মানের ভয়ে। ছাত্র-ছাত্রীরা যখন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল, তিনি বারবার সবাইকে অনুরোধ করেন কোন সাধারণ জনগণের দূর্ভোগ সৃষ্টি না করতে এবং আন্দোলন প্রত্যাহার করতে। তার ভাষায়, "আমার মেয়ের বয়সী একজন আবেগের বশে ভুল করে ফেলেছে"। অথচ এইসব মহান পেশার হবু চিকিৎসকগণ উল্টা কর্মবিরতি ডেকে বসে আছেন। বিকেলে তারা একটা সংবাদ সম্মেলন ডাকার পর সাংবাদিক ভাইয়েরা পর্যন্ত তা বয়কট করেন।

    আইনের এমন একজন লিজেন্ডারি লোকের সাথে এমন আচরণ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। ছিহ!!! ধিক্কার জানাই। ডিপার্টমেন্ট সেরা ছাত্র ছিলেন তিনি। এরপর বিসিএস, বিজেএস দুইটাতেই প্রথম হলেন। সবাই যখন কনফিউজড ছিল যে সে কোনদিকে যাবে, তখন সবাইকে চমকে দিয়ে সে টুপ করে ডিপার্টমেন্টে জয়েন করলো।

    পরের বছর যখন সে আবার বিজেএস দিল, সবাই ভাবলো যে হয়তো ছেলে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। এরকম প্রটোকলের জীবন ছেড়ে কেউ শিক্ষকতার মতো পেশায় আসতে চায়? কিন্তু আসল চমক তো তিনি দিলেন যখন সেবারও প্রথম হওয়ার পর বললেন যে, আমি তো শুধু এটা দেখতে পরীক্ষায় বসেছিলাম যে আমার মেধা আগের মতোই আছে কি না।

    ছাত্র-ছাত্রীরা যখন তাকে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে, "স্যার, আফসোস হয়না যে জাজ না হয়ে শিক্ষক হলেন?" তিনি বলেন, "৫০০টা জাজ নিজের হাতে বানানোর পর আবার কিসের আফসোস ব্যাটা?" কেন তিনি এই গর্বটা করতে পারেন? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের যেকোনো প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে তার নাম বলে দেখুন।

    সবাইই শ্রদ্ধায় মাথা নোয়াতে বাধ্য। তিনি যে জীবনমুখী শিক্ষা দিয়েছেন সবাইকে, এটা কেউ কখনই ভুলতে পারবেন না। বদমেজাজী এই শিক্ষকটি যেকোনো ডিপার্টমেন্টেরই শিক্ষার্থীকে ডেকে কখনও ড্রেসআপ নিয়ে ধমকে দেন, চুল কাটতে বলেন, হাঁটাচলা শেখান, কখনও বা অযথাই ক্যারিয়ার নিয়ে জ্ঞান দেন। রবীন্দ্র ভবনে ক্লাস হয়ে এরকম ডিপার্টমেন্টের খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থীই আছে যারা তাঁকে চেনেন না, বা কখনও তাঁর কাছে কোন 'জ্ঞানগর্ভ উপদেশ' পাননি।

    আলাভোলা এই মানুষটা ঢোলা টি-শার্ট বা আয়রন ছাড়া শার্টের নিচে ট্রাউজার আর স্যান্ডেল পরেই ক্লাসে চলে আসেন। সাথে থাকে একটা ইয়াবড় ব্যাগ, যা ভারী ভারী সব আইনের বইয়ে ঠাসা। প্রথম বর্ষে তিনি যখন আমাদের কোর্স টিচার ছিলেন, একটা রেপ কেস পড়াতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের কথা উঠলেই তিনি কোন না কোনভাবে তুলতেন সকল নির্যাতিত মা-বোনের কথা। স্বভাবসূলভভাবেই তখনও তার চোখের কোনা দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তো।

    এই মানুষটাকে গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কিছু 'মেধাবী' ইন্টার্ন চিকিৎসক মেরে আধমরা করে দিয়েছে। কেন জানেন? তিনি নাকি কর্তব্যরত মহিলা ইন্টার্নকে 'ইভটিজিং' করেছেন। খবরটা শোনার সাথে সাথেই তার বর্তমান, সাবেক শিক্ষার্থীসহ যাঁরা তাকে ন্যুনতম চেনেন, সবার একটাই রিঅ্যাকশন- "পাগল নাকি? জহির স্যার করবেন ইভটিজিং?"

    তবে আসুন, প্রকৃত ঘটনা শুনাই। আমার কথাগুলো সত্যি কি না তা যাচাই করে নিবেন প্রথম-আলো, যুগান্তর, সমকালের মতো জাতীয় দৈনিকগুলো থেকে। কোন ব্যাঙের ছাতা-মাতা ফেসবুক পেজের কথা বিশ্বাস করবেন না যারা আইয়ুব বাচ্চু, রুনা লায়লা, খান হেলালদের ২দিন পরপর উপরে পাঠিয়ে দেয়। স্যারের মেয়ে পরে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছে। তিনি তার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে রাত সাড়ে ১১টায় রামেকে গিয়েছেন। ওয়ার্ডে দৌড়াদৌড়ির সময় পিংকি নামক এক ইন্টার্ন ডাক্তারের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে তিনি স্যারকে গালিগালাজ করেন এবং তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেন। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে স্যার তাকে ননসেন্স বলে। এরপর তিনি ফোন করে ইন্টার্ন ডাক্তার পরিষদের সভাপতি কামালকে ডাকেন এবং ইন্টার্ন ডাক্তাররা দল বেঁধে এসে স্যারকে মারতে থাকেন।

    এক পর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তব্যরত নার্সরা স্যারকে একটি অফিসরুমে ঢুকিয়ে তালা লাগিয়ে দেন। অতঃপর সোনার ছেলেমেয়েরা তালা ভেঙ্গে স্যারকে পুনরায় মারতে শুরু করে। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। তিনি আহত অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে থাকলেও তাঁকে কোন চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।

    রাতে এই খবর পেয়ে আইন বিভাগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকালে একত্র হয়ে প্রতিবাদসভার আয়োজন করে। এবং রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে দোষীদের বিচার কামনা করে। অন্যদিকে হামলাকারীদের বাঁচাতে তারা তাদের কিছু ফেসবুক পেজ থেকে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন স্যারের নামে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এমতাবস্থায় স্যার ন্যায়বিচার পাক এটা সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর দাবী।

    কারণ সাধারণ জনগণের টাকায় তৈরি হওয়া ডাক্তাররা কেন একজন বাবার বয়সি লোকের গায়ে হাত তুলবেন? তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেটাকে কি জাস্টিফাই করে তারপর আইনগত স্টেপ নিতে পারতেন না? কারণ এখন নারী-নির্যাতনের কেস দেশে সবচেয়ে গুরুত্বসহকারে এবং কমসময়ের মধ্যে বিচার হয়। আর ইন্টার্ন ডাক্তারদের এরকম ক্যাডারসূলভ আচরণ এইই প্রথম না। কয়দিন পরপরই এরকম নেতিবাচক কারণে তাঁরা খবরের শিরোনাম হন। এমনকি মহিলা ইন্টার্নকে 'ম্যাডাম' না ডেকে 'আপা' ডাকায় চিকিৎসা না করেই হসপিটাল থেকে বের করে দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে রোগীর মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটেছে এই রামেকে।

    এতকিছুর পরেও ঐ অসহায় লোকটা মামলা করেননি নিজের মান-সম্মানের ভয়ে। ছাত্র-ছাত্রীরা যখন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল, তিনি বারবার সবাইকে অনুরোধ করেন কোন সাধারণ জনগণের দূর্ভোগ সৃষ্টি না করতে এবং আন্দোলন প্রত্যাহার করতে। তার ভাষায়, "আমার মেয়ের বয়সী একজন আবেগের বশে ভুল করে ফেলেছে"। অথচ এইসব মহান পেশার হবু চিকিৎসকগণ উল্টা কর্মবিরতি ডেকে বসে আছেন। বিকেলে তারা একটা সংবাদ সম্মেলন ডাকার পর সাংবাদিক ভাইয়েরা পর্যন্ত তা বয়কট করেন।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close